নিজস্ব প্রতিনিধি: শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে ঐক্য ও আদর্শের আলোকবর্তিকা হয়ে শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন। তিনি দেশে না এলে আমরা এ পর্যায়ে আসতে পারতাম না। সেদিন তিনি দেশে আসায় আমরা স্বপ্ন দেখতে পেরেছি।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শেখ হাসিনার ৪০তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাহাউদ্দিন নাছিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৪০ বছর আগে বাংলাদেশের জাতীয় ও রাজনৈতিক জীবনে ভয়াবহ দুর্দশা ছিল। দেশে কোনো গণতন্ত্র ছিল না। জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল এবং ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। এ দু’টি ঘটনা একই ঘটনার ধারাবাহিক। দেশ ও আওয়ামী লীগও করুণ অবস্থায় ছিল। তখন ঐক্য ও আদর্শের প্রতীক হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয়। সেদিন বঙ্গবন্ধুকন্যা আলোর দিশারী হয়ে দেশে আসেন। তিনি এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের মানুষকে জাগরিত ও ঐক্যবদ্ধ করেছেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি হওয়ার পরও খুনি, একনায়ক জিয়াউর রহমান তাকে দেশে আসতে বারণ করেছিলেন। তিনি সেদিন নিজ বাড়িতে উঠতে পারেননি, আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, আমি সর্বহারা, আমি আপনাদের এবং দেশের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করলাম। তাকে এ পর্যন্ত ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে দেশকে ভালোবেসে, মানুষকে ভালোবেসে জাতির পিতার স্বপ্নের গণতান্ত্রিক উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দেশে এসেছিলেন। এখন দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তাই শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য অপরিহার্য।
তিনি আরো বলেন, ১৭ মে শেখ হাসিনা দেশে এসেছিলেন বলেই জাতির পিতার হত্যার বিচার করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশে মহাত্মা গান্ধী হত্যার সঠিক বিচার হয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা খুনিদের সঙ্গে আপস করেননি। বিচার না হলে আমরা কলঙ্কিত জাতি হয়ে থাকতাম। বঙ্গবন্ধুকন্যা আমাদের সেই কলঙ্ক থেকে মুক্ত করেছেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন সোনার বাংলাদেশ গড়তে সোনার মানুষ চাই। আমরা সোনার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে পারি। দেশ ও মানুষের স্বার্থে আসুন আমরা নিজেদের উৎসর্গ করি। শেখ হাসিনা ১৭ মে যেভাবে দেশকে ভালোবেসে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন, আসুন আমরাও তাতে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজেদের উৎসর্গ করি।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ এর পর কেউ কেউ বলতো রাজাকার-যুদ্ধাপরাধী বলে ভাগাভাগি করার কি দরকার। এ কথা বলে তারা অপরাধীদের বিচার রুখতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা আপস না করে বঙ্গবন্ধুর করে যাওয়া আইনেই তাদের বিচার করেছেন। যারা দেশবিরোধী, সাম্প্রদায়িক চেতনার অপরাজনীতি করে মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। সে কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হয়েছে। আজ যারা ধর্মব্যবসায়ী তাদেরও মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের এদেশে স্থান নেই। তারা চাইলে পাকিস্তানে গিয়ে রাজনীতি করুক। আমরা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে গড়ে তুলবো।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ম আব্দুর রাজ্জাক, কাজী শহীদুল্লাহ লিটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, আব্দুল্লাহ আল সায়েম, দফতর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন প্রমুখ।